তেঁতুলের আচার | তেঁতুলের আচারের উপকারিতা | Guyanese tamarind achar recipe

ছবি দেখে নিশ্চয়ই জিভে জল চলে এসেছে? তেঁতুল এমনই এক ফল, যার নাম শুনলেই সবারই জিভে জল আসতে বাধ্য।টক এই ফলটির গুণ বেশি মিষ্টি। কারণ এটি খেলে শরীরে একই সঙ্গে অনেক রকম উপকার মেলে। তেঁতুল কাচা,পাকা, আচার কিংবা সস তৈরি করে বিভিন্ন ভাবে খাওয়া যায়। পাকা তেঁতুল সংরক্ষণ করে সারাবছর খাওয়া যায়।

আমি প্রতিদিন বিভিন্ন রকমের পোস্ট করে থাকি এইসব পোস্ট পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করুন

তেঁতুলের পুষ্টিগুণ


প্রতি ১০০ গ্ৰাম পাকা তেঁতুল মোটা খনিজ পদার্থ ২.৯ গ্ৰাম, খাদ্য শক্তি ২৮৩ কিলোক্যালরি আমিষ ৩.১ গ্ৰাম চবিআ ০.১ গ্ৰাম শর্করা ৬৬.৪ গ্ৰাম ক্যালসিয়াম ১৭০ মিলিগ্ৰাম আয়রন ১০.৯ মিলিগ্ৰাম ক্যারোটিন ৬০ মাইক্রোগ্ৰাম ও ভিটামিন সি ৩ মিলিগ্ৰাম।

তেঁতুলের কিছু উপকারিতা

তেঁতুলের আচার | তেঁতুলের আচারের উপকারিতা | তেতুলের আচার দাম

কোষ্ঠকাঠিন্যর সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে চাইলে তেঁতুলের সাহায্য নিন। তেঁতুলের মধ্যে টাটারিক অ্যাসিড, ম্যালিক অ্যাসিড এবং পটাশিয়াম আছে যা কোষ্ঠন্যকাঠিন্য দূর করে।এখনো আয়ুবেদে তেঁতুল পাতা ডায়েরিয়া সারাতে ব্যবহার হয়। এছাড়া তেঁতুল গাছের ছাল এবং শিকড় পেটের ব্যাথা সারাতে ব্যবহার করা হয়।

তেঁতুলের উচ্চ মাএায় ফাইবার আছে আর একই সঙ্গে এটা সম্পূর্ণ ফ্যাট ফ্রি। রিসার্চ করে দেখা গেছে রোজ তেঁতুল খেলে ওজন কমে।এর জন্য দায়ী এতে উপস্থিত flavonoids and polyphenols এ ছাড়াও এতে উপস্থিত Hydroxycitric acid ক্ষুধা কমায়।

তেঁতুল উপস্থিত ফ্ল্যাভরনয়েড ব্যাড কোলেস্টেরল কমায় এবং গুড কোলেস্টেরল বাড়ায়। এছাড়াও রক্তে ট্রাইগ্লিসারাইড (এক ধরনের ফ্যাট) জমতে দেয় না। এতে উপস্থিত উচ্চ পটাশিয়াম রক্ত চাপ কম করতে সাহায্য করে।

তেঁতুলে উপস্থিত ফ্ল্যাভরনয়েড ব্যাড কোলেস্টেরল কমায় এবং গুড কোলেস্টেরল বাড়ায়। এছাড়াও রক্তে ট্রাইগ্লিসারাইড (এক ধরণের ফ্যাট) জমতে দেয় না। এতে উপস্থিত উচ্চ পটাশিয়াম রক্ত চাপ কম করতে সাহায্য করে।

তেঁতুলে উচ্চ পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট আছে যা কিডনি ফেলিওর এবং কিডনি ক্যান্সার রোধ করতে সাহায্য করে।

তেঁতুল গাছের পাতা এবং বাকল অ্যান্টি সেপটিক এবং অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল‚ ফলে ক্ষত সারিয়ে তুলতে সাহায্য করে।

নিয়মিত তেঁতুলের বীজের গুঁড়া খেলে পেপটিক আলসার সেরে যায়। তেঁতুলে উপস্থিত পলিফেনলিক কম্পাউন্ড আলসার সারিয়ে তোলে বা হতে দেয় না।

পাকা তেঁতুল ভিজিয়ে রেখে সকালে শুধু পানি খেলে হাত-পায়ের জ্বালা কমে।

তেঁতুল ক্ষতিকারক আলট্রা ভায়োলেট রে-র হাত থেকে ত্বককে বাঁচাতে সাহায্য করে। এছাড়াও যাদের ব্রণের সমস্যা তাদের জন্যেও উপকারী তেঁতুল। তেঁতুলে উপস্থিত হাইড্রক্সি অ্যাসিড ত্বকের এক্সফলিয়েশন করতেও সাহায্য করে যার ফলে মরা কোষ উঠে যায় এবং ত্বক উজ্জ্বল দেখায়।

গর্ভাবস্থায় তেঁতুল খাওয়া যাবে কি?


গর্ভাবস্থায় নারীরা সাধারণত তেঁতুল খেতে পছন্দ করেন। চিকিৎসাগত দিক থেকেও রয়েছে এর উপকারিতা। তেঁতুলের টক উপাদান গর্ভবতী নারীদের মর্নিং সিকনেস থেকে অনেকটাই মুক্তি দেয়। গর্ভাবস্থায় তেঁতুল খাওয়া নিরাপদ বলেই প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। তবে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণে তেঁতুল খাওয়া উচিত।

তেঁতুলে থাকা নির্দিষ্ট কিছু প্রোটিন গর্ভাবস্থায় কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করে। গর্ভাবস্থায় অন্যতম প্রধান সমস্যা হচ্ছে ব্লাড প্রেসার। তেঁতুলের পটাশিয়াম এবং আয়রন ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে। তেঁতুল, শরীরে অ্যাসপিরিন জাতীয় ওষুধের কাজে বাঁধা তৈরি করে থাকে। তাই গর্ভাবস্থায় তেঁতুল খাওয়ার আগে ডাক্তারের সাথে আলোচনা করে খাওয়া উচিত।

ছোটখাটো সতর্কতা অবলম্বন করে তেঁতুল খেলে সেটা গর্ভাবস্থায় নিরাপদ খাবার হিসেবেই গণ্য হয়। তবে মনে রাখবেন, আপনার খাদ্য তালিকায় তেঁতুল রাখার আগে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে নিতে ভুলবেন না যেন।

তেঁতুলের মধ্যে রয়েছে অসাধারণ পুষ্টিগুণ, যা দূরে রাখবে শরীরে অনেক সমস্যা


যার নাম শুনলেই জিভে জল আসে তা হল তেঁতুল। টক-জাতীয় খাবার যাদের পছন্দ, তাঁদের পছন্দের খাবারের তালিকায় যে তেঁতুলের আচার থাকবে সেকথা বলাই বাহুল্য। অনেকে আবার এও মনে করেন যে, তেঁতুল খেলে নাকি শরীরের একাধিক ক্ষতি হতে পারে। কিন্তু, জানেন কী তেঁতুল শরীরে অনেক সমস্যাকে দূরে রাখতে সাহায্য করে। জেনে নিন শরীরের কোন কোন সমস্যায় তেঁতুল খেলে উপকার পাবেন।

তেতুলের আচারের উপকারিতা


তেঁতুলের আচার | তেঁতুলের আচারের উপকারিতা | তেতুলের আচার দাম

১) কারওর যদি পেট ফাঁপা এবং বদহজমের সমস্যা থাকে, তাহলে বাসি তেঁতুল এক কাপ জলে ভিজিয়ে তাতে সামান্য নুন এবং চিনি বা গুড় মিশিয়ে খেলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।


২) অনেকেই জানেন যে, গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মায়েদের তেঁতুল খাওয়ার একটা প্রবণতা দেখা যায়। আসলে তেঁতুল বমির ভাব কাটাতে সাহায্য করে বলেই গর্ভবতী মায়েরা তেঁতুল খেতে খুবই পছন্দ করেন।

৩) ভিটামিন সি-এর একটা বড় উৎস তেঁতুল। শরীরে ভিটামিন সি-এর ঘাটতি থাকলে অনায়াসেই তেঁতুল খেয়ে সেই অভাব পূরণ করতে পারেন।

৪) অনেকেই জানেন না, অন্যান্য ফলে তুলনায় পাকা তেঁতুলে খনিজের পরিমাণ অনেকটাই বেশি। তাই পাকা তেঁতুল খেলে শরীরে প্রয়োজনীয় খনিজের অভাব পূরণ হয়।

৫) ছোট শিশুদের কৃমির সমস্যা খুবই পরিচিত একটি সমস্যা। তেঁতুল কিন্তু এই কৃমিনাশক হিসাবে খুব ভাল কাজ করে।


৬) হজমের সমস্যা দূর করতে তেঁতুল কতখানি উপকারি সেকথা আগেই বলা হয়েছে। কিন্তু জানেন নি যাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা রয়েছে, তাঁরাও তেঁতুল খেলে খুব ভাল উপকার পাবেন।

৭) যাদের রক্তে চিনির মাত্রা বেশি, অর্থাৎ যাঁরা ডায়াবেটিস-এ আক্রান্ত তাঁরাও খাদ্যতালিকায় তেঁতুল রাখতে পারেন। এরমধ্যে থারা এনজাইম রক্তে চিনির পরিমাণ কমাতে সাহায্য করে।

৮) তেঁতুলের মধ্যে থাকা ভিটামিন সি শরীরে রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে, ফলে সর্দি-কাশীর মতো সমস্য়া থেকে সহজেই মুক্তি পাওয়া যায়।

তেঁতুল আমাদের দেশের বসন্তকালের টকজাতীয় ফল হলেও সারা বছর পাওয়া যায়। অনেকেরই ধারণা তেঁতুল খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর এবং তেঁতুল খেলে রক্ত পানি হয়। এ ধারণা সম্পূর্ণ ভুল, বরং তেঁতুলে রয়েছে প্রচুর পুষ্টি ও ভেষজ গুণ। তেঁতুল দেহে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে এবং হৃদরোগীদের জন্য খুবই উপকারী। তেঁতুল দিয়ে কবিরাজি, ইউনানী,হোমিও ও এলোপ্যাথিক ওষুধ তৈরি করা হয়। তেঁতুলকে হার্টের টনিক বলা হয়। এটা লিগুমিনোসি গোত্রের অন্তর্ভুক্ত। এর বৈজ্ঞানিক নাম Tamarindus indica । তেঁতুলের ফলে এসিডিক পাল্প থাকে। এটা সরাসরি খাওয়া যায় এবং জ্যাম, জেলী, আচার, সিরাপ ও পানীয় তৈরী করেও খাওয়া যায়। তেঁতুলে পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন, আঁশ, পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় উপাদান বিদ্যমান। তেঁতুল যেসব রোগের জন্য উপকারী তার মধ্যে-স্কার্ভি রোগ, কোষ্টবদ্ধতা, শরীর জ্বালা করা অন্যতম। এসব রোগে তেঁতুলের শরবত খুব উপকারী।

আরো পড়ুন: রুহ আফজা দাম

তেঁতুল রক্তের কোলেস্টেরল কমায় । দেহের মেদভুঁড়ি কমায়। পেটে গ্যাস হলে তেঁতুলের শরবত খেলে ভালো হয়। তেঁতুল খেলে কোনো ক্ষতি হয় না। তবে বেশি খেলে রক্তের চাপ কমে যেতে পারে। তবে প্রতিদিন কমপক্ষে বীজ ছাড়া আঁশসহ ২৫ গ্রাম তেঁতুল লবণ ও মিষ্টি ছাড়া ভক্ষণ করলে ব্লাড প্রেসার ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে। অনেকেরই ভ্রান্ত ধারণা আছে তেঁতুল খেলে সেক্স কমে যায়, কিন্তু নিয়মিত তেঁতুল খেলে শরীর থেকে অতিরিক্ত ফ্যাট বের হয়ে সেক্স আরো বাড়িয়ে দেয়। পাকা তেঁতুল কফ ও বায়ুনাশক, খিদে বাড়ায় ও উষ্ণবীর্য হয়। তেঁতুল খাওয়ার পরে যদি পাতলা পায়খানা হয় তাহলে বোঝা যাবে তেঁতুল শরীরে ভাল কাজ করছে। অবশ্য একবারের বেশী পাতলা পায়খানা হবে না। পাতলা পায়খানার সাথে ফ্যাট গলে বের হয়ে যায়। পাতলা পাযখানা না হলেও উপকার হবে। যদি কেউ প্রতিদিন নিয়মিত এক ঘন্টা দ্রুত হাটে ও কমপক্ষে ২৫ গ্রাম করে তেঁতুল খায়, তাহলে তার হাটে ব্লক হতে পারবে না। তেঁতুল ভরাপেটে খাওয়াই ভাল।

প্রতিদিন নিয়মিত তেঁতুল খেলে অনেক উপকার পাওয়া যায় তার কিছু নিম্নে বর্ণনা করা হল:  তেঁতুল হার্ট ভাল রাখে। তেঁতুল ডায়াবেটিস কমায়। তেঁতুল শরীরের কোলেষ্টেরল ও ফ্যাট কমায়। তেঁতুল শরীরের ত্বকের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে ও ত্বক ভাল রাখে। তেঁতুল এন্টিঅক্সিডেন্টের একটি ভাল উৎস যা ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। তেঁতুল তাপমাত্রা কমিয়ে জ্বর সারায়। তেঁতুল ঠান্ডা লাগা রোগে উপকারী। তেঁতুল শরীরের পরিপাক ক্রিয়া সক্রিয় রাখে। তেঁতুল হজমে সাহায্য করে। তেঁতুল ক্ষুধা বাড়ায় । তেঁতুল কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। তেঁতুল শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করে দেয়। তেঁতুল জন্ডিস রোগে উপকারী। এছাড়াও তেঁতুল গাছের ছাল, ফুল, পাতা, বিচি ও ফল সবই ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। তেঁতুল বীজের শাঁস পুরনো পেটের অসুখে উপকারী। তেঁতুল পাতার রস কৃমিনাশক ও চোখ ওঠা সারায়। মুখে ঘা বা ক্ষত হলে পাতা তেঁতুল জলে কুলকুচি করলে উপকার পাওয়া যায়।

রোজ তেঁতুল খাওয়ার উপকারিতা অনেক


ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা থেকে শুরু করে ডায়াবিটিস সবেতেই খুব ভাল কাজ করে তেঁতুল। আর তাই রোজ খাওয়ার ডেষ্টা করুন

তেঁতুল ( Tamarind) বললেই প্রথম মনে যা আসে তা হল ফুচকা। ফুচকার তেঁতুল জলই কিন্তু সবচেয়ে মহার্ঘ্য উপাদান। শেষ ফুচকা খেতে পাতা ফেলার আগে একটু তেঁতুল জল চেখে দেখেন না এমন মানুষের সংখ্যা দলে ভারী। এছাড়াও তেঁতুল দিয়ে মাছের টক, আচার খেতে কার না ভাল লাগে! তেঁতুলের কিন্তু অনেক গুণ। কিন্তু হাতের সামনে পাওয়া সহজলভ্য এই ফলকে অনেকেই হেলাফেলা করেন। যে কোনও বিদেশী ফলের তুলনায় অনেক বেশি পুষ্টি রয়েছে তেঁতুলের মধ্যে। সুস্বাস্থ্যের জন্য আমরা পকেট খসিয়ে অনেক রকম বাহারি খাবার কিনি। জটিল তাদের নামের বহর। কিন্তু সেই তালিকায় ব্রাত্য তেঁতুল। আর তাই রোজ একটু করে পাতে তেঁতুল রাখলে অনেক রকম উপকার পাবেন। অগ্ন্যাশয়ে টিউমারের সমস্যা থেকে হার্টের রোগ এমনকী ওজন কমাতেও ভীষণ রকম কার্যকরী তেঁতুল।

1) হার্ট ভাল রাখে: তেঁতুল হার্টের জন্য দারুণ উপকারী। কারণ এটি কোলেস্টেরল এবং রক্তচাপ রাখে নিয়ন্ত্রণে। এছাড়াও থাকে ভিটামিন সি। যা ক্ষতিকারক ফ্রি র‌্যাডিক্যালকে শোষণ করে। যে কারণে কোনও অ্যালার্জির সমস্যায় তেঁতুল খাওয়ার কথা বলা হয়। এছাড়াও থাকে পটাশিয়াম। যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে।

2) হজমের সমস্যায়: সেই প্প্র্রাচীন কাল থেকেই হজমের ওষুধ তৈরি করতে আর্য়ুবেদ শাস্ত্রে তেঁতুল ব্যবহার করার নিদর্শন পাওয়া গিয়েছে। তেঁতুল আমাদের পিত্তথলি থেকে এক রকম উৎসেচক নির্গত হতে সাহায্য করে। যে কারণে হজমের সমস্যা দূর হয়। হজম তাড়াতাড়ি হয়। এছাড়াও তেঁতুলের মধ্যে থাকে প্রচুর পরিমাণ ফাইবার। যা আমাদের রেচনে সাহায্য করে। যাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা রয়েছে তাঁরাও কিন্তু খেতে পারেন তেঁতুল।

3) পুষ্টিগুণে ভরপুর: তেঁতুলে প্রচুর পরিমাণে প্রয়োজনীয় পুষ্টি রয়েছে। প্রতিদিন ১০০ গ্রাম তেঁতুল খেতে পারলে, ৩৬% থায়ামিন, ৩৫% আয়রন, ২৩% ম্যাগনেসিয়াম এবং ১৬% ফসফরাস পাবেন। এছাড়াও এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে নিয়াসিন, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন সি, কপার এবং পাইরিডক্সিন। রয়েছে সুস্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয় অনেক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট।

4) ওজন কমাতে দারুণ কাজ করে: তেঁতুলে হাইড্রক্সি সাইট্রিক অ্যাসিড নামে একটি যৌগ রয়েছে যা শরীরে চর্বি জমা হতে বাধা দেয়। এই অ্যাসিড সেরোটোনিন নিউরোট্রান্সমিটারের মাত্রা বাড়িয়ে খিদে কমায়। আর খাবার কম খেলে ওজন কমবেই। যে কারণেই ফুচকার তেঁতুল জলের এত কদর।

5) স্নায়ুর জন্য ভাল: তেঁতুলে বি ভিটামিন, থায়ামিন রয়েছে- যা স্নায়ুর সঠিক কার্যকারিতা এবং পেশীর বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয়।

6) জ্বালা, যন্ত্রণা কমায়: তেঁতুল যে কোনও রকম প্রদাহ কমাতে কার্যকর কারণ এতে উচ্চ মাত্রার টারটারিক অ্যাসিড রয়েছে। যা একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট । Geraniol, এটি আরেকটি প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা অগ্ন্যাশয়ের টিউমারের বৃদ্ধি রোধ করতে পারে। বেশ কিছু সমীক্ষাতেই তা দেখা গিয়েছে। এছাড়াও উচ্চ মাত্রার পলিফেনল এবং ফ্ল্যাভোনয়েড রয়েছে। যা আমাদের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। যে কারণে ডায়াবিটিক রোগীদের তেঁতুল খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।

তেঁতুলের উপকারিতা অপকারিতা ও গুনাগুন


একটি ফল হিসেবে আমাদের অনেকের কাছে পরিচিত হল তেঁতুল।

আপনি কি জানতে চান তেঁতুলের নানা ধরনের উপকারী গুণ গুলো সম্পর্কে?

আমাদের দেশ একটি প্রাকৃতিক সমৃদ্ধশালী একটি দেশ। নানা ধরনের গাছে ঘেরা, আমাদের এই দেশ। আমাদের এই দেশে, যেদিকে চোখ যায় চারদিকে শুধু গাছ আর গাছের সমারোহ। এদের মধ্যে কিছু যেমন ফুল গাছ রয়েছে, তেমনি রয়েছে ফল গাছ, রয়েছে নানা ধরণের ওষুধি গাছ। প্রতিটি ফুল গাছের যেমন সময়কাল আছে, ঠিক তেমনি করে ফলগাছের একটি নির্দিষ্ট সময়কাল আছে। যদিও বাংলা জৈষ্ঠ্যমাসকে ফলের মাস বলা হয়। তবুও সারা বছরই কোন না কোন ফলের দেখা মিলে আমাদের এই দেশে।

নানা ধরণের জানা অজনায়া ফল গাছ রয়েছে আমাদের চারপাশে। এই গাছগুলোর মধ্যে বেশির ভাগ গাছ আমাদের অক্সিজেন সরবরাহকারী পাশাপাশি,আমাদের খাদ্যের যোগানদাতা বটে। গাছপালা থেকে আমরা নানা ধরনের ফলমূল থেকে আমাদের ভিটামিনের চাহিদা পূরণ করে থাকি। তাই সেই জন্য গাছ আমাদের পরম বন্ধু হিসেবে কাজ করে।

তেঁতুলর বৈজ্ঞানিক নাম

একটি টকজাতীয় ফল হিসেবে অনেকের কাছেই বেশ পছন্দের হল তেঁতুল। তেঁতুলের বৈজ্ঞানিক নাম হলো ( Tamarindus Indica )

তেঁতুলের ইংরেজি নামঃ


তেঁতুলের ইংরেজি নাম হলো ( Melanesian Papeda ) । এটি একটি দানা যুক্ত ফল। বিশেষ আবরণের খোসা দ্বারা পানি আবৃত থাকে এই ফলটির। এটি কাঁচা অবস্থায় যেমন খাওয়া যায় ঠিক তেমনি এটি পাকা অবস্থায় ভালো খাওয়া যায়। তাই আমাদের দেশের ছোট বড় সকলের কাছে জনপ্রিয় একটি ফল হল তেঁতুল।

তেঁতুলের উপকারিতাঃ


তেঁতুল শুধুমাত্র আমরা শুধু যে ফল হিসেবে খাই তা কিন্তু নয়। বরং তেঁতুল আমাদের শরীরে নানা ধরনের শারীরিক সমস্যা সমাধানে, বেশ উপকার সাধন করে। কিন্তু আপনি কি জানেন তেঁতুলের উপকারিতার কথা? আপনাদের সুবিধার্থে চলুন জেনে আসি তেঁতুলের বেশ কিছু উপকারিতার কথা-

শরীরে হজম শক্তি বৃদ্ধি করে

তেঁতুল আমাদের শরীরে হজম শক্তি বাড়তে সাহায্য করে। যার কারণে আমাদের পেটের পীড়া, গ্যাস্ট্রিক, ডাইরেরিয়ার মতো সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারি।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে :


নিয়মিত তেতুল খেলে আমাদের শরীরে কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

পেটের ব্যাথা দূর করে :


তেঁতুল গাছের ছাল বা বাকল আমাদের শরীরে পেটের ব্যাথা দূর করতে সাহায্য করে। তাই যাদের এই সমস্যাটি রয়েছে তারা প্রক্রিয়াকরণ খেয়ে নিতে পারেন তেঁতুল গাছ ছাল বা বাকল।

বহুমূত্র রোগ নিয়ন্ত্রণ:

তেঁতুলের বীজ খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরে চিনির পরিমান কমাতে সাহায্য করে। নিয়মিত তেঁতুলের বীজে খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরে ডায়বেটিক রোগ নিরাময় করতে ভূমিকা পালন করে। অন্যদিক ডায়বেটিক আক্রান্ত রোগীদের শরীরে সুগার নিরাময়ে কার্যকর ভূমিকা পালন করে। এর অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আসে ডায়বেটিক রোগ।

তাই যারা ডায়বেটিক সমস্যায় আক্রান্ত তাদের রোগটি নিয়ন্ত্রণে খেতে পারেন তেঁতুলের বীজ।

ওজন নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা পালন


তেঁতুল সম্পূন ফ্যাট ফ্রি। পাশাপাশি তেঁতুল সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে বিধায় তেঁতুল আমাদের শরীরে ওজনের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে।

ক্যান্সার প্রতিরোধে কার্যকরী:

তেঁতুলে রয়েছে এন্টি অক্সিডেন্ট। যা আমাদের মানব ক্যান্সার এর জীবাণু প্রতিরোধে ভূমিকা পালন করে। তেতুলের ফলে শরীরে ক্যান্সার প্রতিরোধে বেশ কার্যকর ভূমিকা পালন করে।

বিভিন্ন ক্ষত নিরাময়ে:


তেঁতুল গাছের পাতা এবং ছালে রয়েছে তীব্র পরিমানে এন্টি সেপটিক। যা আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরণের ক্ষত নিরাময়ে কার্যকর ভূমিকা পালন করে।

ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতেঃ


তেঁতুল আমাদের ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। সেই সাথে ত্বককে সূর্যের আলোর ক্ষতিকর অতিবেগুনি রশ্মির হাত থেকে ত্বককে সুরক্ষা প্রদান করে।

আলসার প্রতিরোধে:


নিয়মিত তেতুলের বীজ গুঁড়ো করে নিয়মিত খেলে আমাদের শরীরে আলসার প্রতিরোধ করতে ভূমিকা পালন করে।

হার্ট সু্স্থ রাখতে :


তেঁতুল আমাদের শরীরে বিদ্যমান কোলেস্টেরল এর প্রভাব কমাতে সাহায্য করে। যার কারণে আমাদের হার্ট সুস্থ থাকে।

সর্দি-কাশি প্রতিরোধে ভূমিকা পালন:


নিয়মিত তেঁতুল খাওয়ার ফলে ট্যাবআমাদের শরীরে সর্দি কাশি প্রতিরোধের ক্ষেত্রে ভূমিকা পালন করে।

এলার্জি প্রতিরোধে:


আমাদের শরীরে নানা ধরনের এলার্জি প্রতিরোধে ভূমিকা পালন করে থাকে তেঁতুল।

লিভারের সুরক্ষা প্রদান:


নিয়মিত তেঁতুল খাওয়ার ফলে আমাদের লিভার সুরক্ষিত থাকে। ফলে লিভারের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়।

তেঁতুলের অপকারিতা 


উপকারিতার পাশাপাশি তেতুলের বেশ কিছু অপকারিতা রয়েছে। চলুন জেনে নেই তেঁতুলের অপকারিতা সম্পর্কে

শরীরে রক্তপাত বৃদ্ধি করে:


অনেক সময় নির্দিষ্টি কিছু ঔষুধ যেমন এন্টি প্ল্যাটিলেট ড্র্যাগ ,ওইস্পিরিন ইত্যাদি ওষুধ যদি কোন কারণেই খেয়ে থাকেন, তার পাশাপাশি তেতুল খাওয়ার ফলে শরীরে রক্তপাত বৃদ্ধি পায়।

গ্লুকোজের মাত্রা কমেঃ


অতিরিক্ত তেঁতুল খাওয়ার ফলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমে যায়। ফলে অনেকেই হাইপোগ্লেসিমিয়াতে আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়।

শরীরে এলার্জির মাত্রা বৃদ্ধি পায়:

আরো পড়ুন: রুহ আফজা দাম

অনেক সময় অতিরিক্ত তেঁতুল খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরে এলার্জির বৃদ্ধি পায়। অনেক সময় সেই এলার্জি থেকে নানা ধরনের ক্ষতের সৃষ্ট হয়।

ওজন কমে যাওয়া


অতিরিক্ত পরিমাণে তেঁতুল খেলে শরীরের ওজন কমে যেতে পারে।

দাঁত নষ্ট হয়:


এছাড়াও অতিরিক্ত তেঁতুল খেলে দাঁতের এনামেল নষ্ট হয়।ফলে দাঁতের ক্ষতি হয়। দাঁত নষ্ট হবার মতো সমস্যা হয়ে থাকে।

পিওথলি সমস্যা:


অতিরিক্ত তেঁতুল খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরে পিত্তথলিতে সমস্যা হয়। এই সমস্যা থেকে অনেকের পিত্তথলিতে পাথর হতে সাহায্য করে।

জন্ডিস

অতিরিক্ত তেঁতুল খেলে জন্ডিসের মতো সমস্যা হতে পারে।

বাংলাদেশের মানুষের কাছে তেঁতুল বেশ জনপ্রিয় একটি ফল। আচার ও আচার জাতীয় ফল হিসেবে তেঁতুলের রয়েছে ব্যাপক চাহিদা। তেঁতুলের আচার মানেই জিভে পানি চলে আসার মতো ব্যাপার। বিভিন্ন ধরনের ফল মেখে খাওয়ার ক্ষেত্রেও এর ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। তবে আমাদের কাছে শুধু তেঁতুলই জনপ্রিয় নয়, তারচেয়ে বেশি জনপ্রিয় তেঁতুলের বিচি। কেননা সম্প্রতি ভারত থেকে ৯০ মেট্রিক টন তেঁতুলের বিচি আমদানি করেছে বাংলাদেশ।

বাজারে তেঁতুলের আচার, চাটনির জনপ্রিয়তার চেয়েও যে তেঁতুলের বিচির জনপ্রিয়তা এত বেশি তা আমরা খুব কম মানুষই জানি। ফল ও আচার ছাড়াও তেঁতুলের বিচির রয়েছে নানাবিধ ব্যবহার।

সাধারণত তেঁতুলের কথা শোনা গেলেও তেঁতুলের বিচির কথা খুব একটা শোনা যায় না। তবে তেঁতুলের বিচি যে একেবারে ফেলনা নয়, তা বোঝা গেল এর দাম শুনেই। বাংলাদেশ ভারত থেকে প্রতি টন তেঁতুলের বিচি আমদানি করেছে ২০০ মার্কিন ডলার মূল্যে। তাহলে ভাবুন এর জনপ্রিয়তা ও চাহিদা কত বেশি। দেশীয় উৎপাদনের বাজারে চাহিদা মেটানো যাচ্ছে না বলেই এখন আমদানি হচ্ছে এ তেঁতুলের বিচি।

কী কাজে লাগে তেঁতুলের বিচি?

বাংলাদেশে মূলত পাটকল ও কাপড়ের মিলে সুতা রং করার কাজে তেঁতুলের বিচি ব্যবহার করা হয়। সুতার রং টেকসই করার কাজে বহুদিন ধরেই এর ব্যবহার হয়ে আসছে। এ ছাড়া মশার কয়েল তৈরির কাজে কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার হয় তেঁতুলের বিচি।

দেশে মশার উপদ্রব বেড়ে যাওয়ায় কয়েল তৈরির জন্য স্থানীয় উদ্যোক্তারাই এ আমদানি করা তেঁতুলের বিচি কেনার বড় ক্রেতা। এসব শিল্প উৎপাদন কেন্দ্রিক প্রয়োজনের বাইরেও রয়েছে তেঁতুলের বিচির নানা ব্যবহার।

চিকিৎসার ক্ষেত্রে ইউনানি, আয়ুর্বেদ, হোমিও ও অ্যালোপ্যাথিক ওষুধ তৈরিতে তেঁতুলের বিচির ব্যবহার আছে। এ ধরনের কাঁচামাল ছাড়াও ঔষধি গুণের জন্য খুবই উপকারী জিনিস এটি।

শুষ্ক চোখের চিকিৎসায় যে ড্রাপ তৈরি হয় তাতেও ব্যবহার করা হয় তেঁতুলের বিচি। এ ছাড়া পাকস্থলীর গোলযোগ, লিভার ও গল-ব্লাডারের সক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে এ বিচি। গভাকালীন বমিভাব ও মাথা ঘোরার সমস্যায় তেঁতুলের বিচির শরবত বেশ উপকারী।

তেঁতুল বিচি গরম পানিতে ফুটিয়ে এক ধরনের আটা তৈরি করা হয়। যা কিনা ছবি আঁকার কাজে ব্যবহার করা হয়

আমি আশা করি যে আপনি পোস্ট পড়ে অনেক খুশি হয়েছে। আর আমরা আশা করি যে, আপনি যে বিষয় পড়তে চেয়েছেন সেই বিষয়টা অবশ্যই পেয়েছে। এরকম সকল তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে সবসময় প্রবেশ করবেন। আমাদের সাইডে থাকার জন্য ধন্যবাদ।

Next Post Previous Post